দক্ষিণ কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ বিমান মহড়ার পর বুধবার একদিনে রেকর্ড ২৩টি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে উত্তর কোরিয়া। উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের জবাবে বিতর্কিত সামুদ্রিক সীমানা রেখার উপর আকাশ থেকে তিনটি যুদ্ধবিমানের মাধ্যমে স্থল ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে করে তার প্রতিক্রিয়া জানায় সিউল। তবে এর তাৎক্ষণিক জবাব দিয়েছে পিয়ংইয়ংও। প্রতিক্রিয়া স্বরূপ ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ১০০টি আর্টিলারি শেল নিক্ষেপ করে তারা।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর একদিনে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ কমপক্ষে ২৩টি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে। যার মধ্যে একটি ক্ষেপণাস্ত্র যা দক্ষিণের শহর সোকচো থেকে মাত্র ৩৭ মাইল দূরে অবতরণ করে।
এ ব্যাপারে পিয়ংইয়ংয়ের দাবি, দক্ষিণ কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান বৃহৎ আকারের সামরিক মহড়ার প্রতিক্রিয়া হিসাবে এই উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। এছাড়াও ওই বিমান মহড়াকে ‘আক্রমণাত্মক এবং উসকানিমূলক’ বলে অভিহিত করেছে উত্তর। এ ব্যাপারে মঙ্গলবার এক হুঁশিয়ারি দেয় পিয়ংইয়ং। সেখানে বলা হয়, তারা যদি যৌথ মহড়া অব্যাহত রাখে তবে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর মূল্য’ দিতে হবে তাদের। যাকে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের একটি গোপন হুমকি হিসাবে দেখা হচ্ছে।
তবে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিপক্ষ পার্ক জিন।
উল্লেখ্য, এ বছর রেকর্ড সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে উত্তর কোরিয়া। এছাড়াও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ২০০৬ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ৬টি পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েছে পিয়ংইয়ং। সিউল ও ওয়াশিংটনকে যৌথ মহড়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি দিতে ৭ম পারমাণবিক পরীক্ষাও চালাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ার কাছাকাছি সমুদ্রসীমায় পিয়ংইয়ংয়ের ক্ষেপণাস্ত্র পড়লে ফের উত্তেজনা বাড়ে। প্রতিক্রিয়া জানাতে সিউল বিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে এবং সেখানকার বাসিন্দাদের ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে সরে যেতে বলা হয়। উত্তরের এমন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনাকে ভূখণ্ডের একটি ‘অগ্রহণযোগ্য’ লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে সিউল।
উত্তর কোরিয়ার বাব বার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের জেরে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল – পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার নীতি তৈরি করেছেন। যেটিকে ‘কার্যকর আঞ্চলিক আক্রমণ’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।